ভূমিকা: যখন গেমার রাণী ও র্যাপ কিং মিলিত হন এক DM-এ
ইন্টারনেট দুনিয়ায় প্রতিদিন হাজারো ভাইরাল কন্টেন্ট জন্ম নেয়, কিন্তু কিছু মুহূর্ত থাকে যা বিশ্বজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠে। ২০২৫ সালের আগস্ট মাসে এমনই এক ঘটনা ঘটে যায়, যেখানে বিশ্বখ্যাত র্যাপার ড্রেক (Drake) এবং গেমিং ও ইউটিউব সেনসেশন SSSniperwolf মুখোমুখি হন—অবশ্য যুদ্ধক্ষেত্র ছিল না বাস্তবের, বরং সোশ্যাল মিডিয়ার।ঘটনার সূচনা হয় একটি Instagram DM থেকে, যা পরিণত হয় সোশ্যাল মিডিয়ার ইতিহাসে অন্যতম “Savage” মুহূর্তে।
১. ঘটনাটির সূচনা: ড্রেকের সাহসী পদক্ষেপ
আগস্ট ২০২৫, জনপ্রিয় স্ট্রিমার Adin Ross-এর Kick লাইভ স্ট্রিমে উপস্থিত ছিলেন একঝাঁক ইন্টারনেট তারকা—xQc, Trainwreckstv এবং হঠাৎ করেই যোগ দেন ড্রেক।স্ট্রিম চলাকালীন এক পর্যায়ে ড্রেক প্রকাশ করেন যে, তিনি সম্প্রতি SSSniperwolf (আসল নাম: Alia Shelesh)-কে Instagram-এ ডাইরেক্ট মেসেজ পাঠিয়েছেন।
তিনি হাসিমুখে বলেন,
> “I hit her up, you know… just to say what’s up.”
কিন্তু উত্তরে SSSniperwolf বিন্দুমাত্র দ্বিধা না করে লিখেছেন:
> “I have a man.”
২. ড্রেকের পাল্টা মজার উত্তর

ড্রেক থেমে থাকেননি। তিনি হালকা মজার ঢঙে জিজ্ঞাসা করেন:
> “Well, can we fight to the death?”
এই হালকা রসিকতা শুনে লাইভ স্ট্রিমে উপস্থিত সবাই হেসে ওঠেন। কিন্তু এখানেই যেন শেষ হয়ে যায় কথোপকথন। ড্রেক নিজেই বলেন,
> “That was pretty much the end of the interaction.”
এখান থেকেই শুরু হয় ইন্টারনেট জুড়ে আলোচনা—“SSSniperwolf ড্রেককে read করে রেখে দিলেন!”
৩. Read Receipt: নীরবতার শক্তি
সোশ্যাল মিডিয়ায় “Seen” বা “Read” নোটিফিকেশন কখনও কখনও কথার চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী অস্ত্র হয়ে ওঠে।SSSniperwolf তাঁর উত্তরে না বললেও, ওই read করেই কথোপকথন শেষ করে দেন।এই এক মুহূর্তকেই অনেকে বলছেন “The Silent KO”।
৪. SSSniperwolf-এর Instagram পাল্টা চাল
পরের দিন, ১০ আগস্ট ২০২৫-এর সকালে, SSSniperwolf তাঁর Instagram Story-তে পোস্ট করেন:
> “Good morning. Made headlines for leaving a rapper on read lol.”
এটি ছিল সরাসরি ও ব্যঙ্গাত্মক উত্তর—যা প্রমাণ করে, তিনি ঘটনাটিকে একেবারেই সিরিয়াসলি নেননি। বরং, পুরো বিষয়টিকে মজার ছলে উদযাপন করেছেন।
৫. ইন্টারনেটের প্রতিক্রিয়া: হাসি, মিম আর বিতর্ক
এই ঘটনা ছড়িয়ে পড়তে বেশি সময় নেয়নি। X (পূর্বে Twitter) জুড়ে শুরু হয়ে যায় মিম তৈরির হিড়িক।কেউ লিখেছেন:
> “This ain’t corny to y’all?”অন্য একজন স্মৃতি রোমন্থন করে বলেছেন:“She had under 10k subs once… now even Drake’s in her DMs!”
প্রতিটি মন্তব্যে ছিল অবাক হওয়া, প্রশংসা এবং কিছুটা মজা করার সুর।
৬. SSSniperwolf: এক অপ্রতিরোধ্য সোশ্যাল মিডিয়া ব্যক্তিত্ব
Alia Shelesh, ওরফে SSSniperwolf, ইউটিউবে ৩ কোটি+ সাবস্ক্রাইবার নিয়ে বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় নারী গেমার ও কনটেন্ট ক্রিয়েটর।তিনি গেমিং ভিডিও, রিঅ্যাকশন কন্টেন্ট, এবং লাইফস্টাইল ভিডিওর জন্য বিখ্যাত।তাঁর নির্ভীক ব্যক্তিত্বই তাঁকে সোশ্যাল মিডিয়ায় আলাদা করে তুলেছে—এই ঘটনাতেও সেই আত্মবিশ্বাস স্পষ্ট।
৭. কেন এই ঘটনা ভাইরাল হলো?
একটি সাধারণ DM ভাইরাল হওয়ার পেছনে কয়েকটি কারণ আছে:
1. দুই তারকা, দুই দুনিয়া — র্যাপ মিউজিক ও গেমিং দুনিয়ার মেলবন্ধন।
2. Savage প্রতিক্রিয়া — SSSniperwolf-এর সরাসরি ও মজাদার জবাব।
3. জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্মে প্রকাশ — Adin Ross-এর লাইভ স্ট্রিমের প্রভাব।
4. মিম কালচার — ইন্টারনেটের মজার কন্টেন্ট তৈরির প্রবণতা।
৮. সোশ্যাল মিডিয়ার যুদ্ধ: এক রূপক কাহিনি
এই ঘটনাটিকে অনেকে তুলনা করছেন এক ধরনের মিডিয়া যুদ্ধের সাথে—যেখানে অস্ত্র হলো শব্দ, প্রতিক্রিয়া, আর নীরবতা।ড্রেক ছুঁড়েছেন প্রথম আঘাত (DM), SSSniperwolf দিয়েছেন জবাব (I have a man), তারপর নীরবতার মাধ্যমে জিতেছেন যুদ্ধ।অবশেষে, Instagram Story ছিল তাঁর বিজয়ের পতাকা।
৯. জনতার রায়: কে জিতল?
বেশিরভাগ নেটিজেন মনে করছেন, এই ‘যুদ্ধে’ জিতেছেন SSSniperwolf।কারণ, ইন্টারনেটে মাঝে মাঝে নীরবতাই সবচেয়ে বড় অস্ত্র।তবে ড্রেকের হাস্যরসাত্মক মনোভাবও প্রশংসিত হয়েছে—তিনি এটিকে ব্যক্তিগত অপমান না ভেবে হালকাভাবে নিয়েছেন।
১০. ভবিষ্যতের জন্য শিক্ষা
এই ঘটনা আমাদের শেখায়:
সোশ্যাল মিডিয়ায় এক মুহূর্তেই ভাইরাল হওয়া সম্ভব।
নীরবতাও শক্তিশালী প্রতিক্রিয়া হতে পারে।
অনলাইন ইন্টারঅ্যাকশনে হাস্যরস ও আত্মবিশ্বাস অনেকদূর নিয়ে যেতে পারে।
উপসংহার
ড্রেক ও SSSniperwolf-এর এই ছোট্ট ইন্টারঅ্যাকশন প্রমাণ করে, ইন্টারনেটে ভাইরাল হওয়ার জন্য বড় ইভেন্টের দরকার নেই—সঠিক মুহূর্তে সঠিক প্রতিক্রিয়াই যথেষ্ট।এটি কেবল একটি DM-এর ঘটনা হলেও, সামাজিক মাধ্যমের ইতিহাসে এটি থাকবে এক হাস্যকর ও স্মরণীয় অধ্যায় হিসেবে।