তারিখ: ২৭ জুলাই ২০২৫

লিখেছেন: রেদোয়ান মণ্ডল
দীর্ঘদিনের সীমান্ত দ্বন্দ্ব আবার রূপ নিচ্ছে সরাসরি সংঘর্ষে। থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে উত্তেজনা এখন ভয়ঙ্কর রূপ নিচ্ছে। গত কয়েকদিনের মধ্যে সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন কমপক্ষে ৩৩ জন, আহত হয়েছেন বহু, আর বাস্তুহারা হয়েছেন লাখের বেশি সাধারণ মানুষ।
📍 কেন এই যুদ্ধ?

মূল বিবাদ প্রাহ ভিহিয়ার মন্দির ঘিরে, যা ইতিহাস ও সংস্কৃতির দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ হলেও এর অবস্থান নিয়ে দুই দেশের মতবিরোধ দীর্ঘদিনের।১৯০৭ সালের একটি চুক্তি অনুযায়ী অঞ্চলটি কম্বোডিয়ার বলে ধরা হলেও, থাইল্যান্ড দীর্ঘদিন ধরে সেটিকে নিজেদের দাবি করে আসছে।
🧨 সংঘর্ষ কতটা ভয়ানক?
২৪ জুলাই শুরু হওয়া সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন ৩৩ জনের বেশি।
বাস্তুচ্যুত হয়েছেন প্রায় ১.৩ লাখ মানুষ।
থাইল্যান্ড সীমান্তবর্তী অঞ্চলে মার্শাল ল ঘোষণা করা হয়েছে।
জড়িত হয়েছে F-16 ও Jas Gripen জঙ্গি বিমান।
বোমার আঘাতে একটি কম্বোডিয়ান পরিবারের তিন সদস্য নিহত হন – এক বাবা হারিয়েছেন তার স্ত্রী ও দুই সন্তানকে। এই দৃশ্য কাঁদিয়ে দিয়েছে পুরো জাতিকে।
🧍♂️ মানবিক বিপর্যয়
যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত সাধারণ মানুষের কান্না এখন গর্জে উঠছে।
গ্রামের পর গ্রাম খালি হয়ে যাচ্ছে।
মানুষ ঠাঁই নিচ্ছে মন্দির, স্কুল, এমনকি খোলা মাঠেও।
সীমান্তে চলছে শিশুদের কান্না, মায়েদের আকুতি।
থাইল্যান্ডে স্থানীয় মন্দিরগুলো এখন পরিণত হয়েছে বোম শেল্টার-এ। বৃদ্ধ ও স্বেচ্ছাসেবকরা আহতদের সাহায্যে এগিয়ে এসেছেন।
🗣️ কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চলছে
সংঘর্ষ থামাতে তৎপর হয়েছে আন্তর্জাতিক মহল।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দুই দেশের নেতাদের সাথে ফোনে কথা বলেছেন।
শান্তি আলোচনার পথ খুঁজছেন আসিয়ান-এর চেয়ারম্যান আনোয়ার ইব্রাহিম।
কম্বোডিয়ার রাষ্ট্রদূত জাতিসংঘে আবেদন করেছেন যুদ্ধবিরতির জন্য।
তবে এখনো মাটি কামড়ে রয়ে গেছে সংঘর্ষ, মাঝে মাঝে থেমে আবার শুরু হচ্ছে গুলি, গোলা আর বোমার শব্দ।
🏛️ রাজনৈতিক হিসাবনিকাশের খেলাও জড়িত
এই দ্বন্দ্ব শুধুই সীমান্ত নয়, বরং এর পেছনে রয়েছে রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব, পারিবারিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা আর নেতৃত্বের লড়াই।
থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পএতংতার্ন সিনাওয়াত্রা এবং কম্বোডিয়ার প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী হুন সেন এর ব্যক্তিগত কথোপকথন ফাঁস হয়ে পরিস্থিতি আরও খারাপ করেছে।
থাই সরকারে বিভক্তি দেখা দিয়েছে, রাজনৈতিক অস্থিরতা শুরু হয়েছে।
⚠️ শেষ কথা
এটা শুধুমাত্র দুটি দেশের সীমান্ত যুদ্ধ নয় – এটা মানবতার বিপর্যয়।বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে বেড়ানো মানুষ, ভেঙে পড়া পরিবার, শিশুদের কান্না — সব মিলিয়ে পরিস্থিতি হৃদয়বিদারক।সারা বিশ্ব তাকিয়ে আছে এই সংঘর্ষের দিকে, আশায় বুক বাঁধছে শান্তির একটি রশ্মির জন্য।
✅ আপনি কী করতে পারেন?
বিশ্ববাসী হিসেবে মানবিক সহানুভূতি ছড়িয়ে দিন।
সত্য খবর শেয়ার করুন, গুজব নয়।
এবং প্রার্থনা করুন – যেন দ্রুত শান্তি ফিরে আসে এই দুটি দেশে।
এই প্রতিবেদনটি সময় বাংলা টাইম-এর পক্ষ থেকে মানবিক দায়বদ্ধতায় প্রকাশিত।✍️ রিপোর্টার: রেদোয়ান মণ্ডল