নয়াদিল্লি | ৪ আগস্ট ২০২৫ – দেশের আর্থিক জগতকে নাড়িয়ে দিয়েছে অনিল আম্বানি নেতৃত্বাধীন Reliance Group-এর বিরুদ্ধে ₹১৭,০০০ কোটি টাকার বিশাল ঋণ জালিয়াতির মামলা। Enforcement Directorate (ED) এই মামলায় এখন শুধু গ্রুপের কর্মকর্তাদের নয়, বরং ঋণ প্রদানকারী বিভিন্ন ব্যাংকের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করতে চলেছে।

🔹 কী নিয়ে তদন্ত চলছে?
ED-এর সূত্র অনুযায়ী, ২০০৭ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে Reliance Group-এর একাধিক সংস্থা বড় অঙ্কের ঋণ নিয়েছিল। অভিযোগ অনুযায়ী: নকল ডকুমেন্ট ও shell কোম্পানি ব্যবহার করে ঋণ তোলা হয়েছে। ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ অনুমোদন পাওয়ার আগেই কিছু ঋণের টাকা স্থানান্তর করা হয়েছে। বেশ কয়েকটি ঋণ পরে ডিফল্ট বা খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
🔹 মূল ঘটনা ও অভিযোগ
1. Yes Bank কেলেঙ্কারি (₹৩,০০০ কোটি)
২০১৭ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে Reliance গ্রুপের বিভিন্ন কোম্পানি Yes Bank থেকে প্রায় ₹৩,০০০ কোটি ঋণ নিয়েছিল।
অভিযোগ, ঋণের কিছু অর্থ প্রমোটার বা অন্যান্য সংযোগে আগেই স্থানান্তর করা হয়েছিল।
2. Reliance Communications ঋণ জালিয়াতি (₹১৪,০০০ কোটি)
SBI সহ একাধিক ব্যাংকের কাছ থেকে নেওয়া এই ঋণগুলো পরে “Fraud” হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
3. নকল ব্যাংক গ্যারান্টি মামলা
Odisha ভিত্তিক এক কোম্পানির MD Partha Sarathi Biswal-কে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
অভিযোগ, ₹৬৮ কোটি টাকার নকল ব্যাংক গ্যারান্টি Reliance Power-এর পক্ষে তৈরি করা হয়েছিল।
🔹 ব্যাংক কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদ
ED এবার ব্যাংক কর্মকর্তাদেরও তলব করছে। মূলত নিচের বিষয়গুলো নিয়ে প্রশ্ন হবে: ঋণ অনুমোদনের সময় ক্রেডিট মূল্যায়ন সঠিকভাবে করা হয়েছিল কি না। ঋণ বিতরণের আগে নিয়মিত প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়েছিল কি না। ব্যাংক ডিফল্টের পর কী পদক্ষেপ নিয়েছিল।
এছাড়াও, ED ইতিমধ্যে ৩৫টি লোকেশন ও ৫০টি কোম্পানি-র নথি খতিয়ে দেখছে। অনিল আম্বানিকে আগামী ৫ আগস্ট দিল্লির ED অফিসে হাজিরা দিতে বলা হয়েছে এবং তাঁর বিরুদ্ধে Look Out Circular জারি করা হয়েছে।
🔹 শেয়ার বাজারে প্রভাব
এই খবর প্রকাশ্যে আসার পরই বাজারে ধাক্কা লেগেছে:
Reliance Infrastructure ও Reliance Power শেয়ারের দাম একদিনে প্রায় ৫% পর্যন্ত পড়ে গেছে।
বিনিয়োগকারীরা এখন ED তদন্তের ফলাফলের দিকে নজর রাখছেন।
🔹 সারসংক্ষেপ
Reliance Group-কে ঘিরে এই ঋণ জালিয়াতি মামলা ভারতের আর্থিক জগতের অন্যতম বড় ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ED-এর তদন্তে প্রমাণিত হলে এটি দেশের সাম্প্রতিক ইতিহাসের সবচেয়ে বড় কর্পোরেট ঋণ জালিয়াতির মধ্যে একটি হতে পারে।
> উপসংহার: অনিল আম্বানি ও তাঁর গ্রুপের জন্য আগামী কয়েক মাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ED ও CBI-এর তদন্তই নির্ধারণ করবে, এই বিশাল ঋণ জালিয়াতির পেছনের প্রকৃত দায়ীদের নাম।