স্কুল থেকে ফেরার পথে নির্মম হত্যা: উত্তাল ফতেহপুর!

উত্তরপ্রদেশে হৃদয়বিদারক ঘটনা: স্কুল থেকে ফেরার পথে আরিশ খানকে পিটিয়ে হত্যা

ফতেহপুর, উত্তরপ্রদেশ – ২৩ জুলাই ২০২৫:উত্তরপ্রদেশের ফতেহপুর জেলায় এক মর্মান্তিক ঘটনার সাক্ষী হয়েছে গোটা দেশ। মাত্র ১৭ বছরের স্কুলছাত্র আরিশ খান, যিনি ফতেহপুরের মহারিষি বিদ্যা মন্দির ইন্টার কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র ছিলেন, স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এই অমানবিক হত্যাকাণ্ড সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়েছে, যা জনমনে তীব্র প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিয়েছে।

ঘটনার বিবরণ

২৩ জুলাই দুপুরবেলা, স্কুল ছুটির ঠিক পরই আরিশ খান তার বাড়ির দিকে রওনা হচ্ছিলেন। হঠাৎই তিনজন যুবক একটি স্কুটারে চড়ে আসে এবং কলেজ গেটের কাছেই তাকে ঘিরে ধরে। ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, তারা আরিশকে উপর্যুপরি আঘাত করতে থাকে। প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা অনুযায়ী, আরিশ বাঁচার চেষ্টা করলেও কেউ এগিয়ে আসেনি।

আঘাতের পর গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে প্রথমে জেলা হাসপাতালে নেওয়া হয়। কিন্তু অবস্থার অবনতি হওয়ায় পরে কানপুরের একটি বড় হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এই তরুণ ছাত্র।

পরিবার ও স্থানীয়দের ক্ষোভ

আরিশ খানের পরিবার এই ঘটনায় গভীর শোক ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাদের অভিযোগ, স্কুল কর্তৃপক্ষ আগেই জানত যে আরিশকে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল, কিন্তু যথাযথ ব্যবস্থা নেয়নি। স্থানীয় বাসিন্দারা স্কুল প্রশাসনের বিরুদ্ধে অবহেলার অভিযোগ এনে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন।

একজন আত্মীয় জানান,”আমাদের ছেলে কলেজে পড়তে গিয়ে প্রাণ হারাল। বারবার জানানো সত্ত্বেও কেন কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হলো না?”

এছাড়াও এলাকাবাসী কলেজে দুই দিনের শোক পালনের ঘোষণা দেয় এবং দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানায়।

পুলিশি তদন্ত ও গ্রেফতার

ঘটনার পর পুলিশ দ্রুত তদন্ত শুরু করে। সিসিটিভি ফুটেজ ও স্থানীয়দের বক্তব্যের ভিত্তিতে একজন অভিযুক্তকে ইতিমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার নাম জাকির খান লিলি। বাকি দুই অভিযুক্তের খোঁজে তল্লাশি চলছে।

ফতেহপুর জেলা পুলিশ জানিয়েছে,”এই ঘটনায় কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। যারা দোষী, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

সারাংশ (ঘটনার তথ্যচিত্র)

বিষয় বিবরণ

নিহত ছাত্রের নাম আরিশ খানবয়স আনুমানিক ১৭ বছরশিক্ষা প্রতিষ্ঠান মহারিষি বিদ্যা মন্দির ইন্টার কলেজ, ফতেহপুরঘটনার তারিখ ২৩ জুলাই ২০২৫হামলাকারীর সংখ্যা ৩ জনগ্রেপ্তার ১ জন (জাকির খান লিলি)পরিবারের অভিযোগ পূর্ব সতর্কতা থাকা সত্ত্বেও নিরাপত্তাহীনতাস্থানীয়দের প্রতিক্রিয়া বিক্ষোভ, দুই দিনের শোক পালন

সমাজের প্রশ্ন ও চ্যালেঞ্জ

এই ঘটনার পর পুরো দেশজুড়ে প্রশ্ন উঠছে—একজন ছাত্র, যিনি শুধুমাত্র পড়াশোনার জন্য বেরিয়েছিলেন, কেন তাকে এমন নির্মম পরিণতির শিকার হতে হলো? কোথায় ছিলো নিরাপত্তা? শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যদি শিক্ষার্থীরা নিরাপদ না থাকে, তবে শিক্ষার ভবিষ্যৎ কোথায় দাঁড়িয়ে?

এই ঘটনা শুধু একটি হত্যাকাণ্ড নয়, বরং আমাদের সমাজ, শিক্ষা ব্যবস্থা এবং আইনি কাঠামোর একটি নির্মম বাস্তবতার প্রতিচ্ছবি।

লেখক: টাইম বাংলা নিউজতারিখ: ২৮ জুলাই ২০২৫বিষয়: সমাজ ও আইন / উত্তরপ্রদেশ খবর

Share:

WhatsApp
Telegram
Facebook
Twitter
LinkedIn