কলকাতা, আগস্ট ২০২৫: দীর্ঘদিন ধরে কলকাতা ছিল বাংলাদেশের পোষ্যপ্রেমীদের জন্য অন্যতম জনপ্রিয় চিকিৎসা গন্তব্য। উচ্চমানের চিকিৎসা, আধুনিক সরঞ্জাম এবং দক্ষ ভেটেরিনারি বিশেষজ্ঞদের কারণে প্রতিবছর হাজারো বাংলাদেশি পোষ্য মালিক তাদের প্রিয় প্রাণীর চিকিৎসার জন্য কলকাতায় আসতেন। কিন্তু সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা ও ভিসা জটিলতার কারণে এই প্রবাহে বড় ধাক্কা লেগেছে—গত এক বছরে বাংলাদেশ থেকে আগত পোষ্য রোগীর সংখ্যা প্রায় ৯০% কমে গেছে।
পতনের মূল কারণ
১. রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা
বাংলাদেশে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অস্থিরতা ভ্রমণ পরিকল্পনা ও সীমান্ত পারাপারে প্রভাব ফেলেছে। এতে করে পোষ্য চিকিৎসার জন্য কলকাতায় যাতায়াত ব্যাপকভাবে কমেছে।
২. ভিসা জটিলতা
পোষ্যসহ বিদেশ ভ্রমণের জন্য বিশেষ ভিসা প্রক্রিয়া এখন আরও কড়া হয়েছে। অনেক মালিকের অভিযোগ, ভিসা প্রাপ্তিতে সময় বেশি লাগছে এবং নথিপত্র যাচাই প্রক্রিয়া জটিল হয়ে উঠেছে।
৩. খরচ বৃদ্ধি
বিমান ও স্থলপথে পরিবহন ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় অনেকেই পোষ্য নিয়ে বিদেশ ভ্রমণকে অপ্রয়োজনীয় বিলাসিতা হিসেবে দেখছেন।
ক্লিনিকগুলোতে প্রভাব

কলকাতার বিভিন্ন বিশেষায়িত পোষ্য চিকিৎসা ক্লিনিক দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশি রোগীর উপর নির্ভর করত। কিন্তু রোগীর সংখ্যা হঠাৎ কমে যাওয়ায় অনেক ক্লিনিককে এখন ভার্চুয়াল পরামর্শ (Online Consultation) সিস্টেমের দিকে ঝুঁকতে হচ্ছে।
যদিও অনলাইন পরামর্শ পদ্ধতি কিছু ক্ষেত্রে সুবিধাজনক, তবুও ভেটেরিনারি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরাসরি পরীক্ষা ছাড়া সঠিক রোগ নির্ণয় করা কঠিন। ফলে ভুল নির্ণয় ও ভুল চিকিৎসার ঝুঁকি বেড়ে যাচ্ছে।
বিকল্প সমাধান খোঁজা
বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলাদেশের অভ্যন্তরে আন্তর্জাতিক মানের পোষ্য চিকিৎসা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করলে পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক হতে পারে। পাশাপাশি ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে পোষ্য চিকিৎসা ভিসা প্রক্রিয়াকে সহজ করা প্রয়োজন।
ভবিষ্যৎ পরিস্থিতি
যদি রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরে আসে এবং ভিসা নীতি শিথিল হয়, তাহলে আগামী কয়েক বছরে বাংলাদেশ পেট মেড ট্যুরিজম আবার চাঙ্গা হতে পারে। কলকাতার ভেটেরিনারি চিকিৎসকরা আশাবাদী যে এই খাতের হারানো গতি ফেরানো সম্ভব হবে, যদি দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা বৃদ্ধি পায়।