মধ্যপ্রাচ্যের উত্তপ্ত পরিস্থিতি আবারও নতুন মোড় নিয়েছে। সাম্প্রতিক রিপোর্টে জানা গেছে, ইসরাইল ইরানের সাম্প্রতিক পদক্ষেপে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ইরান এখন চীনের সঙ্গে প্রতিরক্ষা চুক্তি করার পথে, যার মাধ্যমে তারা এডভান্সড এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম ও ফাইটার জেট কেনার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

🔹 ইরানের সুপ্রিম লিডারের চীনের সঙ্গে যোগাযোগ
ইসরাইলি গোয়েন্দা সূত্র অনুযায়ী, ইরানের সুপ্রিম লিডার আয়াতুল্লাহ খামেনেই সম্প্রতি চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেছেন।এই বৈঠকে ইরান তাদের আকাশ প্রতিরক্ষা শক্তি বাড়ানোর পরিকল্পনা তুলে ধরে এবং চীনের কাছ থেকে অত্যাধুনিক এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম ও চেংডু J‑10C ফাইটার জেট কেনার প্রস্তাব দেয়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি শুধু সামরিক কেনাকাটা নয়, বরং একটি কৌশলগত জোটের ইঙ্গিত।
🔹 কেন ইরানের জন্য এই চুক্তি গুরুত্বপূর্ণ?
গত কয়েক মাসে ইসরাইলের একাধিক টার্গেটেড এয়ারস্ট্রাইক ইরানের এয়ার ডিফেন্স অবকাঠামোকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।এর ফলে:
ইরানের আকাশ প্রতিরক্ষা দুর্বল হয়ে পড়ে
ইসরাইলের আকাশ-সীমা আধিপত্য আরও সুদৃঢ় হয়
ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা ঝুঁকির মধ্যে পড়ে
এই পরিস্থিতিতে ইরান তাদের প্রতিরক্ষা জোরদার করতে চীনের দিকে ঝুঁকছে, কারণ রাশিয়ার ডেলিভারি বিলম্বিত হচ্ছে এবং পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার কারণে অন্য বিকল্প সীমিত।
🔹 চীনা অস্ত্র যা ইরানের হাতে আসতে পারে
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, ইরান চীনের কাছ থেকে নিম্নলিখিত সামরিক সরঞ্জাম কেনার চেষ্টা করছে—
1. HQ‑9B ও HQ‑22 (FK‑3)
দীর্ঘপাল্লার অত্যাধুনিক এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম
শত্রুপক্ষের জেট ও মিসাইল ধ্বংসে সক্ষম
2. Chengdu J‑10C ফাইটার জেট
৪.৫ প্রজন্মের মাল্টি-রোল ফাইটার
উচ্চ গতিসম্পন্ন ও আধুনিক মিসাইল সিস্টেম সমৃদ্ধ
খবরে আরও জানা গেছে, ইরান তাদের তেল রপ্তানির বিনিময়ে চীনের কাছ থেকে এই সরঞ্জাম নিচ্ছে।
🔹 চীনের অবস্থান
চীন এখনো সতর্ক কূটনৈতিক নীতি অনুসরণ করছে।তারা বারবার ইসরাইলকে সংঘাত নিয়ন্ত্রণে আনতে বলছে, কিন্তু সরাসরি যুদ্ধের পক্ষ নেয়নি।তবে, HQ‑9B ব্যাটারি এবং কিছু এয়ার ডিফেন্স সরঞ্জাম ইতিমধ্যেই ইরানে পৌঁছেছে বলে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে দাবি করা হচ্ছে।
🔹 ইসরাইলের উদ্বেগের কারণ
ইসরাইলের সামরিক বিশ্লেষকরা বলছেন:
ইরান যদি চীনা ফাইটার জেট ও আধুনিক এয়ার ডিফেন্স পায়, তাহলে মধ্যপ্রাচ্যের আকাশে শক্তির ভারসাম্য পাল্টে যেতে পারে।
ইসরাইলের সাম্প্রতিক আক্রমণে দুর্বল হওয়া ইরান দ্রুতই নতুন প্রতিরক্ষা বলয় তৈরি করে ফেলতে পারে।
এতে ইসরাইলের কৌশলগত আধিপত্য ও গোয়েন্দা অভিযান ব্যাহত হতে পারে।
📝 সারসংক্ষেপ
ইসরাইল-ইরান উত্তেজনা এখন এক নতুন অধ্যায়ে প্রবেশ করছে।ইরান যদি চীনের কাছ থেকে HQ‑9B এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম ও J‑10C ফাইটার জেট সংগ্রহ করতে পারে, তবে তা মধ্যপ্রাচ্যের সামরিক ভারসাম্যে বড় পরিবর্তন আনতে পারে।
এই পরিস্থিতি শুধু ইসরাইল নয়, বরং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরবের মতো আঞ্চলিক শক্তিকেও চিন্তায় ফেলছে।