
প্রকাশিত: ৩১ জুলাই ২০২৫ | আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ইরান বর্তমানে এক বহুমুখী সংকটের মুখে দাঁড়িয়ে আছে। সামরিক হামলার হুমকি, মার্কিন অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা, এবং কূটনৈতিক চাপ—সব মিলিয়ে দেশটি বড়ো খতরার মধ্যে রয়েছে।
১️⃣ সামরিক ঝুঁকি: ইসরায়েলি হামলার সম্ভাবনা
ইসরায়েলি হুমকি:ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা ও সামরিক ঘাঁটিগুলোকে লক্ষ্য করে ইসরায়েল বারবার হামলার হুমকি দিচ্ছে। জুন ২০২৫-এ ইসরায়েলের বিমান হামলার পর থেকে তেহরান সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় আছে।
রাশিয়ার সতর্কবার্তা:রাশিয়া জানিয়েছে, ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা হলে তা চেরনোবিল-ধরনের বিপর্যয় সৃষ্টি করতে পারে। তবে রাশিয়া এখনো পর্যন্ত সরাসরি সামরিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি দেয়নি, বরং কূটনৈতিক সমাধানের আহ্বান জানাচ্ছে।
গুপ্তচরবৃত্তি ও নাশকতা:ইরান অভিযোগ করছে, মোসাদ দেশের ভেতরে নাশকতা চালাচ্ছে এবং সম্প্রতি শতাধিক সন্দেহভাজন গুপ্তচর গ্রেপ্তার করেছে।
⃣ অর্থনৈতিক ঝুঁকি: মার্কিন নিষেধাজ্ঞার প্রভাব
১১৫+ কোম্পানি ও জাহাজের ওপর নিষেধাজ্ঞা:যুক্তরাষ্ট্র ইরানের শিপিং নেটওয়ার্ক ও সংশ্লিষ্ট ১১৫টির বেশি প্রতিষ্ঠানকে নিষিদ্ধ করেছে। এর ফলে তেল বিক্রি ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্য কার্যত হুমকির মুখে পড়েছে।
তেল নির্ভর অর্থনীতি সংকটে:ইরানের প্রধান আয়ের উৎস তেল রফতানি। মার্কিন নিষেধাজ্ঞার ফলে ডলার আয় কমে গেছে এবং অর্থনীতিতে বড় ধরনের চাপ তৈরি হয়েছে।
অভ্যন্তরীণ অর্থনৈতিক চাপ:মুদ্রাস্ফীতি ও বেকারত্ব বেড়ে জনঅসন্তোষ বাড়ছে। সামাজিক অস্থিরতা রাজনৈতিক ঝুঁকি তৈরি করছে।
৩️⃣ কূটনৈতিক ও ভূ-রাজনৈতিক চাপ
জাতিসংঘ ও ইউরোপের চাপ:ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও জাতিসংঘ ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।পারমাণবিক আলোচনায় ব্যর্থ হলে জাতিসংঘের স্বয়ংক্রিয় নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল হতে পারে।
আঞ্চলিক অস্থিরতা:ইসরায়েল–ফিলিস্তিন সংঘর্ষের কারণে ইরানের ওপর আন্তর্জাতিক দৃষ্টি আরও তীব্র হয়েছে।আরব বিশ্বের কিছু দেশও ইরানের নীতির বিরুদ্ধে সতর্ক অবস্থানে চলে গেছে।
৪️⃣ অভ্যন্তরীণ সংকট: জনঅসন্তোষ ও রাজনৈতিক অস্থিরতা
অর্থনৈতিক সংকটের ফলে বেকারত্ব ও জনঅসন্তোষ বাড়ছে।
সামাজিক মাধ্যমে সরকারের বিরুদ্ধে অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ছে।
অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক চাপ এবং বহিরাগত হুমকি মিলিয়ে ইরানের জন্য পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল হচ্ছে।
📊 ইরানের বর্তমান চারটি বড়ো ঝুঁকি
ঝুঁকির ধরন মূল কারণ
সামরিক ইসরায়েলি হামলার আশঙ্কা, মোসাদ নাশকতা অর্থনৈতিক মার্কিন নিষেধাজ্ঞা, তেলের আয় হুমকিতে কূটনৈতিক আন্তর্জাতিক বিচ্ছিন্নতা, ইউএন চাপ অভ্যন্তরীণ অর্থনৈতিক সংকট ও জনঅসন্তোষ
🔮 ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা
1. সামরিক সংঘাত তীব্র হলে:আঞ্চলিক যুদ্ধ শুরু হতে পারে এবং তেলের দাম বিশ্ববাজারে অস্থির হবে।
2. কূটনৈতিক সমাধান হলে:ইরান আলোচনায় নমনীয় হলে নিষেধাজ্ঞা শিথিল হতে পারে।
3. অভ্যন্তরীণ অস্থিরতা বাড়লে:জনঅসন্তোষ রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতায় রূপ নিতে পারে।